চুলের অকালপক্কতা নিরসনে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের সন্ধান পেলেন জাপানি বিজ্ঞানীরা

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
আপনার বয়স কম। কিন্তু এ বয়সেও আপনার চুলে পাক ধরেছে। তবে সমস্যা নেই, আপনার চুল আর পাকবে না। অকালপক্বতার সমস্যা দূর হবে। আর কম বয়সে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা নিয়ে কোনো চিন্তাও করতে হবে না আপনাকে।
আপনার সব মুশকিল আসান হবে। চুল পাকের সমস্যা সমাধানে এমন একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট খুঁজে পেয়েছেন জাপানের নাগোয়া ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা। বিভিন্ন রকম ফল ও সবজিতে পাওয়া যায় ওই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারলে চুলের যাবতীয় সমস্যার সমাধান হবে বলেই দাবি বিজ্ঞানীদের।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্টটির নাম লুটিওলিন। গাজর, ব্রকোলি, লেটুস, পালংশাক, বিট, বাঁধাকপি ও ফুলকপির মতো সবজিতে ভরপুর মাত্রায় থাকে। আবার থাইম, আঙুর, আপেল, চেরি, পেয়ারা, স্ট্রবেরি, পিচ ফলেও পাওয়া যায় লুটিওলিন। গবেষকরা বলছেন, এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মেলানোসাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে।
এখন প্রশ্ন হলো— কী এই মেলানোসাইট? চুলের রঙ ধরে রাখে মেলানোসাইট কোষ। এই কোষ আবার জন্মায় স্টেম কোষ থেকে। স্টেম কোষ সারা শরীরেই থাকে। এই স্টেম কোষ থেকেই বিভিন্ন রকম কোষের জন্ম হয়। এর মধ্যে মেলানোসাইট কোষও আছে। ত্বক ও চুলের রঙের জন্য দায়ী এ কোষ। মেলানোসাইট কোষ থেকে যে রঞ্জক তৈরি হয়, তার নাম মেলানিন। এই মেলানিনের কারণেই একমাথা কুচকুচে কালো চুল হয়। কিন্তু সমস্যাটা তৈরি হয় অন্য জায়গায়। এই মেলানোসাইট কোষ চুলের গোড়ায় তৈরি হয় এবং সেখানেই তা মেলানিন তৈরি করে। প্রতিটি চুলের গোড়াতেই মেলানোসাইট থাকে। এখন এই কোষের যদি কম বা বেশি হয়, অথবা মেলানোসাইট নষ্ট হয়ে গিয়ে মেলানিন তৈরি করতে না পারে, তখন চুলের স্বাভাবিক রঙ ফিকে হতে থাকে। একসময়ে সব রঙ উঠে গিয়ে সাদা হয়ে যায়। বয়সকালে মেলানিনের উৎপাদন কমে আবার কম বয়সে অত্যধিক মানসিক চাপ, লিভারের অসুখ ও অতিরিক্ত নেশার কারণে মেলানিন নষ্ট হয়ে চুলে পাক ধরতে পারে।
লুটিওলিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এই মেলানোসাইট কোষ ও মেলানিন রঞ্জকের ভারসাম্যই ধরে রাখতে পারে। গবেষক মাসাশি কাতো ও তাকুমি কাগাওয়া তিনর কম অ্যান্টি-অ্যাক্সিডেন্ট নিয়ে গবেষণাটি করছিলেন— লুটিওলিন, হেসপেরেটিন ও ডায়োসমেটিন। এদের মধ্যে লুটিওলিনই সবচেয়ে ভালো কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন তারা।
এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্টটি আবার প্রদাহনাশ করতেও পারে। পাশাপাশি ক্যানসারের ঝুঁকিও কমাতে পারে বলে দাবি। গবেষকরা জানাচ্ছেন, প্রতি দিনের ডায়েটে যদি এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ সবজি বা ফল খাওয়া যায়, তা হলে চুল পাকার সমস্যা তো কমবেই, পাশাপাশি শরীরের রোগপ্রতিরোধ শক্তিও বাড়বে।