বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক দুই কর্মকর্তাকে গ্রেফতারের দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩০ পিএম
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চেৌধুরী এবং জেনারেল ম্যানেজার শাহ আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানি থেকে জনসাধারণের আমানত লুটপাটে সহায়তা করার অভিযোগ এনে ওই দুই কর্মকর্তাকে গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং কোম্পানির গ্রাহকরা। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে ক্ষতিপূরণসহ গ্রাহকদের আমানতের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।
সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ব্যক্তি আমানতকারী ফোরামের' ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওই দাবি জানান প্রতিষ্ঠানটিতে বিনিয়োগকারীরা।
ফোরামের কো-অর্ডিনেটর তাসদিক আহমেদ লিখিত বক্তৃতায় বলেন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং কোম্পানিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা এসকে সুর চেৌধুরী ও জেনারেল ম্যানেজার শাহ আলমের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পর্ষদ প্রতিষ্ঠানটিতে গ্রাহকের আমানত লুটপাট করে। ওই চক্রে বহুল সমালোচিত পিকে হালদার সিন্ডিকেট করতে পেরেছে বিএসইসি এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এই দুটি রেগুলেটরি সংস্থার কারণে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর এবং জেনারেল ম্যানেজার শাহ আলম সরাসরি জনসাধারণের আমানত লুটপাটে এই সিন্ডিকেটকে সহায়তা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালে হাটকোর্ট থেকে অবসরপ্রাপ্ত আমলা নজরুল ইসলাম খানকে (এনআই খান) চেয়ারম্যান করে নতুন একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ চার বছরেও তার নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদ গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় একেবারেই অক্ষম। তিনি এই ডুবন্ত প্রতিষ্ঠানে তার পরিবার ও পরিজন থেকে ৭-১০ জনকে চাকরি দিয়েছেন। এই কোম্পানির চেয়ারম্যান থেকে কোম্পানির কুমিরের খামার (ময়মনসিংহে অবস্থিত) ‘উদ্দীপন' নামে একটি এনজিওকে দিয়েছেন, যার চেয়ারম্যানও তিনি। এখানে আমানতকারীদের স্বার্থ বেশ ভালোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এনআই খানকে অবিলম্বে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে এসব কাজ স্বল্প সময়ের মধ্যে অনুসন্ধান করে দোষ পাওয়া গেলে তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তাসদিক আহমেদ বলেন, ব্যক্তি আমানতকারীদের আজীবনের সঞ্চয় ছয় বছর ধরে আটকে আছে। এই সময়ে ১ হাজার ৪০০ ব্যক্তি আমানতকারীর সঞ্চয়ের অন্তত ৭০ শতাংশ মূল্য হারিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের জন্য আমাদের আমানত ছয় বছর ধরে আমরা ফেরত পাচ্ছি না। এর দায়িত্ব অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া উচিত।
সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের পক্ষ থেকে চার দফা দাবি তুলে ধরে তাসদিক আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে ব্যক্তি আমানতকারীদের বক্তব্য শোনার ব্যবস্থা করতে হবে এবং ব্যক্তি আমানতকারীদের টাকা ক্ষতিপূরণসহ ফেরত দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ব্যক্তি আমানতকারী ফোরামের সভাপতি বাদল নন্দী, জেনারেল ডিপোজিটর সোহেল আহমেদ, নাসরাত হোসেন, জাওয়াদুল ইসলাম প্রমুখ।