Logo
Logo
×

ব্যাংক

ব্যাংক যে অবস্থায়ই থাকুক গ্রাহকের ক্ষতি হবে না: গভর্নর

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১৮ এএম

ব্যাংক যে অবস্থায়ই থাকুক গ্রাহকের ক্ষতি হবে না: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, আগে সংঘটিত নানা অনিয়ম ও লুটপাটের কারণে ব্যাংক খাতের কয়েকটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। এসব দুর্বল ব্যাংককে বিভিন্নভাবে তারল্য সহায়তা দেওয়া হবে। কোনো ব্যাংক বন্ধ করা যাবে না। গ্রাহকদের স্বার্থকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেব। 

গভর্নর আরও বলেন, ‘ব্যাংক যে অবস্থায়ই থাকুক না কেন আমরা গ্রাহকদের স্বার্থকে সবার আগে অগ্রাধিকার দেব। গ্রাহকদের কোনো ক্ষতি হবে না। এজন্য আমানতের সুরক্ষা বিমার পরিমাণ ১ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা করা হয়েছে। ফলে দেশের ব্যাংক খাতের ৯৫ শতাংশ আমানতকারী এখন তাদের আমানতের পুরো অর্থ ফেরত পাবেন। 

রোববার বিকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেছেন। 

তিনি বলেন, ‘আমাদের চেষ্টা থাকবে দুর্বল পর্যায়ে থাকা ব্যাংকগুলো যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারে, আমরা সেই চেষ্টা করব। ব্যাংকগুলোকে টেকনিক্যাল, অ্যাডভাইজারি ও লিকিউডিটি সুবিধা দিব। আমরা চাই না কোনো ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাক।’

গভর্নর আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়নি। যে কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় চলবে। তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা দিতে হবে নিয়মিত। কেউ কেউ এই বিষয়গুলো নিয়ে অপপ্রচার চালিয়েছে, কোনো ব্যাংক নিজ থেকে অতি-উৎসাহিত হয়ে করেছে। কেউ অনিয়ম করলেও তার প্রতিষ্ঠানিক হিসাব চালু রাখা হয়েছে। যাতে ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে। 

তিনি আরও বলেন, আমানতকারীদের আস্থা ফেরাতে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে ৯৫ শতাংশ আমানতকারীর অ্যাকাউন্ট নিরাপদ হলো। আমরা আশা করি কোনো ব্যাংকই দেউলিয়া হবে না। তবে ভেতরে ভেতরে অনেক ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে আছে। এগুলো যাতে পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে পারে সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করে যাচ্ছে। প্রথমে ১০টি ব্যাংক এরপর ক্রমান্বয়ে সব ব্যাংকের আর্থিক সক্ষমতা পরীক্ষা করা হবে। এরপর প্রয়োজনে মার্জ করা হবে। তবুও গ্রাহকের আমানত ঝুঁকিতে ফেলা হবে না।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, টাস্কফোর্স গঠনে কাজ অনেকটাই এগিয়ে গেছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যেই কাজ শুরু করতে পারবো। ব্যাংকগুলোর ফরেনসিক প্রতিবেদন তৈরিতে সহয়াত করবে এডিবি। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোর স্বাস্থ্য যাচাই করে সে আলোকে কাজ করবে টাস্কফোর্স। বর্তমানে ব্যাংকগুলোর লেনদেন দৈনিক ভিত্তিতে যাচাই করা হচ্ছে। রেগুলার ক্যাশফ্লো মনিটরিং করা হচ্ছে।

ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে জানিয়ে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ২৫ হাজার কোটি টাকা রয়েছে। কিন্তু বিতরণ হচ্ছে না। তার মানে পদ্ধতিগত ক্রটি আছে। কঠিন শর্ত দিয়ে ঋণ বিতরণ হবে না। নমনীয় নীতি দরকার। আমরা চেষ্টা করব যাতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ঋণ পায়। এ খাতে এডিবি অর্থ সহায়তা করতে আগ্রহী।

এক প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, প্রভাবশালীদের জন্য যেসব পলিসি করা হয়েছে, তা রিভিউ করা হবে। রিভিউ করার পর যদি দেখা যায় ১০ বা ২০ জন লোকের জন্য করা হয়েছে। তাহলে তা বাতিল করা হবে। ব্যাংক খাতের পরিবারতন্ত্র রুখতে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করতে হবে। তবে তা এখনই করা হচ্ছে না। শেষ দিকে করা হবে। কারণ আইন বারবার পরিবর্তন করা যায় না।

ব্যাংক খাতের তারল্য সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, ৭০ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক খাতের বাইরে ছিল। তাই সংকট দেখা দিয়েছিল। বর্তমানে ৩০ হাজার কোটি টাকা ফেরত এসেছে। তাই পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ফলে টাকা উত্তোলনের যে সীমা ছিল তা তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে যে ১০ ব্যাংকের সমস্যা রয়েছে। তাদের গ্রাহকদের আরও কিছুদিন ধৈর্য ধরতে হবে।

এস আলমের সম্পদ সংক্রান্ত এক প্রশ্নে তিনি বলেন, যে এসব সম্পদ কিনবে তা নিজ দায়িত্বে কিনতে হবে। এখানে বাংলাদেশ ব্যাংক দায়-দায়িত্ব নেবে না। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম