দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে অব্যাহত গতিতে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় এ খাতে ঘাটতি হচ্ছে। এ ঘাটতি মেটাতে হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে। যে কারণে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। চলতি সেপ্টেম্বরের শুরুতে নিট রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৩০৭ কোটি ডলার।
বুধবার দিনের শুরুতে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১১৫ কোটি ডলারে। গত এক মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ১৯২ কোটি ডলার। এক সপ্তাহ আগে ২১ সেপ্টেম্বর রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ১৪৫ কোটি ডলার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ৩০ কোটি ডলার।
বর্তমানে প্রতিমাসে গড়ে আমদানি ব্যয় হচ্ছে ৬০০ কোটি ডলার। এ হিসাবে তিন মাসের জন্য লাগবে ১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় তিন মাসের কিছু বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। আমদানি আরও কমালে চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।
সূত্র জানায়, রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কমায় বাজারে ডলারের প্রবাহ কমেছে। এদিকে নতুন এলসি খোলা ও আগের এলসির দেনা পরিশোধ করতে হচ্ছে। এছাড়া বৈদেশিক ঋণসহ অন্যান্য দেনাও শোধ করতে হচ্ছে। এসব খাতে ব্যাংকগুলো নিজস্ব উদ্যোগে ডলারের সংস্থান করতে না পারায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে চাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে সীমিত আকারে ডলারের জোগান দিচ্ছে। এতে বকেয়া সব বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে না। কিছু বকেয়া থাকছে। সেগুলোর বিপরীতে বাড়তি সুদ দিতে হচ্ছে। এতে দেনা আরও বেড়ে যাচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে দেখা যায়, সেপ্টেম্বরের শুরুতে দেশের গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৯২৩ কোটি ডলার। গত বুধবার দিনের শুরুতে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭০৬ কোটি ডলারে। আলোচ্য সময়ে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ২১৭ কোটি ডলার। এক সপ্তাহ আগে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৭৩৪ কোটি ডলার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ২৮ কোটি ডলার।
এদিকে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা পরিশোধ করতে হবে নভেম্বরের শুরুতে। তখন রিজার্ভ এক ধাক্কায় আরও কমে যেতে পারে। কেননা নভেম্বরের আগে বড় ধরনের কোনো বৈদেশিক ঋণের অর্থ ছাড় হচ্ছে না। নভেম্বরে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ ৪৮ কোটি ডলার ছাড় হতে পারে। এছাড়া ওই সময়ে বিশ্বব্যাংক ও এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের কিছু ঋণও ছাড় হতে পারে। তখন রিজার্ভ কিছুটা বাড়তে পারে। আর বছরের শেষদিকে রপ্তানি আয় বাড়ার আশা করা হচ্ছে।