‘বাংলাদেশ এখন থেকে আমেরিকার উপদেশ নেবে না, দেবে’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০৫:০১ পিএম
বিশ্ব রাজনীতিতে বাংলাদেশের এখন উপদেশ দেওয়ার সময় বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন- বিশ্বের ভবিষ্যৎ কী ধরনের হওয়া উচিত, আমেরিকার বৈদেশিক নীতি কী ধরনের হওয়া উচিত- সেগুলোতে আমরা এখন উপদেশ দেব। আমাদের এখন উপদেশ নেওয়ার সময় না, উপদেশ দেওয়ার সময়।
মোমেন আরও বলেন, এখন থেকে বাংলাদেশ আমেরিকার উপদেশ নেবে না, বরং উপদেশ দেবে। সংকীর্ণ পররাষ্ট্রনীতি কিংবা দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখলে আমেরিকা বিশ্বের কাছে ‘কুলাঙ্গার’ হিসেবে পরিচিতি পাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো চাপের কাছে মাথা নত করেননি, লেজুড়বৃত্তি করেননি, ভবিষ্যতেও করবেন না।
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (ইআরডিএফবি) আয়োজিত ‘আওয়ামী লীগের সফল ও গৌরবময় পথচলার ৭৫ বছর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সফল এবং গৌরবময় এই ৭৫ বছরের ইতিহাসে ৪৩ বছর নেতৃত্ব দিচ্ছেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের প্রত্যাশাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দক্ষতার সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনা করে আসছেন। তার জাদুকরি নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের তালিকায় নিম্ন আয়ের দেশ থেকে বেরিয়ে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশে জায়গা করে নিয়েছে আরও আগেই।
মোমেন বলেন, বর্তমান অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বড় প্রকল্পগুলোর উদ্যোগ নিয়েছে এই সরকার, বাস্তবায়নও প্রতিনিয়ত দৃশ্যমান হতে চলেছে। ভাবা যায়, ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে আখ্যায়িত এই দেশে আজ হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে পদ্মা সেতু, ঢাকা মেট্রোরেল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং কর্ণফুলী ট্যানেলসহ অনেক উন্নয়ন প্রকল্প।
তিনি বলেন, দুনিয়া নিয়ে ভাবার সময় আমাদের এখন এসেছে। আমরা তাদের আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই। এজন্যই আমাদের প্রয়োজন আছে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের।
মোমেন বলেন, উন্নত দেশগুলোর প্রতি আমাদের দাবি, অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ করে মানুষের মনমানসিকতা ও সংস্কৃতির বিকাশে সেই টাকাগুলো খরচ করা হোক। পশ্চিমা বিশ্বের ফ্রি থিঙ্কিংয়ের পরিধি সীমিত হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি আমাকে দাওয়াত দেয়, জিও পলিটিক্সের বিষয়ে আলোচনা করতে। তারপর তারা আমাকে শর্তও দিয়ে দেয় যে, আপনি গাজা এবং ফিলিস্তিনের ইস্যুতে কোনো কথা বলবেন না। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির মতো বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে উন্মুক্তভাবে সব কিছু আলোচনা করা যায়। তারা এখন কতটা ন্যারো মাইন্ডেড হয়ে গেছে এটা থেকেই বোঝা যাচ্ছে।
সাবেক মন্ত্রী আরও বলেন, ৭৫ বছরে আওয়ামী লীগ দেখিয়েছে তারা একটি স্বাধীন সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র তৈরি করেছে। শুধু দেশ তৈরি নয়, সেই দেশটাকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করার জন্য যা যা প্রয়োজন সবই করেছে।