আ.লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত
সাম্প্রদায়িক অপশক্তি পরাজিত করার অঙ্গীকার
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৪, ১০:২২ পিএম
নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী (প্লাটিনাম জয়ন্তী) উদ্যাপিত হয়েছে। রোববার এ উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো জাতির পিতার সমাধি ও প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া মাহফিল, র্যালি, আলোচনা সভা, সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে। এসব কর্মসূচিতে দেশ থেকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি পরাজিত করার মধ্যদিয়ে রক্তমূল্যে অর্জিত বিজয়কে সুসংহত করার অঙ্গীকার করা হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুরুতে সকাল ৭টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সেখানে তিনি কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
পরে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসাবে প্রধানমন্ত্রী আরেকবার বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, কাজী জাফর উল্লাহ, ড. আব্দুর রাজ্জাক, এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শাজাহান খান, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের চলার পথে প্রধান বাধা বর্ণচোরা বিএনপি। সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদী শক্তি আমাদের শত্রু। এ শত্রু মোকাবিলা করে রক্তমূল্যে অর্জিত বিজয়কে সুসংহত করতে হবে।
তিনি বলেন- সংগ্রাম, সাফল্য ও সংস্কৃতির বর্ণিল প্রতিভাসের নাম আওয়ামী লীগ। জনগণের কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয়ে প্রতিরোধের দাবানল ছড়িয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনার নাম আওয়ামী লীগ। আমরা ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে সৃষ্টির পতাকা উড়াই।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার ৬ বছর পর শেখ হাসিনা অন্ধকারে আশার আলো হয়ে এসেছিলেন। তার নেতৃত্বে গণতন্ত্র শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পুনরুত্থান হয়েছে। গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন ঘটেছে।
দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের পর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ। এ ছাড়া মহানগর উত্তর-দক্ষিণ যুবলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সকাল থেকেই ধানমন্ডি-৩২ নম্বর এবং তার আশপাশ এলাকা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। উপস্থিত নেতাদের জয় বাংলা ও জয় বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এদিন সকাল ১০টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বেগম শামসুন্নাহার প্রমুখ। কোটালীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, সহসভাপতি গোলাম কিবরিয়া, পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান হাজরা প্রমুখ।
৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী (প্লাটিনাম জয়ন্তী) উপলক্ষ্যে রোববার বিকালে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন তিনি। সমাবেশ মঞ্চে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে র্যালি করে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল নির্বাচনের স্মার্ট প্যানেল। তেজগাঁও শাহ পন্থী শাহ মাজার হেফজো ও এতিমখানায় কেক কাটা হয় এতে বক্তব্য দেন স্মার্ট প্যানেলের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবদুল আহাদ চৌধুরী, মহাসচিব প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, আনোয়ার হোসেন, আবদুল করিম সরকার, শাহজাহান প্রমুখ।