বিএনপি-জামায়াত যখনই সুযোগ পায় বাংলাদেশের শান্তি বিনষ্ট করে: নাছিম
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৪, ০৫:০৪ পিএম
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, আমরা আমাদের এই পবিত্র মাতৃভূমিকে সাম্প্রদায়িক শক্তির হাত থেকে মুক্ত করতে চাই। কারণ, এরা (বিএনপি-জামায়াত) যখনই সুযোগ পায় বাংলাদেশের শান্তি বিনষ্ট করে ও আঘাত করে। দেশের মানুষ শান্তিতে থাকলে এরা অশান্তি বোধ করে।
তিনি বলেন, আমাদের বাংলাদেশের সব ধর্মের মানুষ যখন শান্তিতে বসবাস করে তখনই এরা দুঃখ, কষ্ট ও বেদনা পায়। আর বেদনা থেকেই মুক্ত হওয়ার জন্য এরা সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করে।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর মতিঝিলের এজিবি কলোনির হরিমন্দিরে গীতা সঙ্গীত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাহাউদ্দিন নাছিম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, খুনি জিয়া-মোশতাকদের উত্তরাধিকার হলো এই বিএনপি। ক্যান্টনমেন্টের সেনা ছাউনিতে বসে গোয়েন্দা সংস্থার পকেটেই এদের জন্ম। এরা স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে এরা বাংলাদেশের মানুষের বিপক্ষে অস্ত্র নিয়ে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে। এই দেশবিরোধী অপশক্তির হাত থেকে আজও বাংলাদেশ মুক্তি পায়নি।আজও তাদের হাত থেকে আমরা কেউই রক্ষা পাইনি।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদীদের সমর্থন এবং সহযোগিতা করে। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে বিএনপি-জামায়াত সুযোগ পেলে সন্ত্রাস ছড়িয়ে দেবে। এদের সৃষ্ট সন্ত্রাসীরা শুধু বাংলাদেশি মানুষ হত্যা করেনি, এরা আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতসহ বিশ্বের নানা দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। এদেশে আমরা সবাই সমান। আমরা বাঙালি। আমরা এ দেশেরই সন্তান। আমরা সবাইকে মর্যাদা ও সম্মান জানাব। এটাই আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। কোনো অপশক্তি আমাদের এই ঐতিহ্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ যেন নষ্ট না করতে পারে সেদিকে আমাদের সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।’
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতির পিতা বাংলাদেশের সব ধর্মের মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রিয়জন ছিলেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কারণেই আমরা আমাদের লাল সবুজের এই বাংলাদেশ পেয়েছি। আমাদের স্বাধীনতার অমীয় বাণী ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা, অর্থনৈতিক মুক্তি ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতির হাত থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা। জাতির পিতা সেই স্বপ্ন পূরণ করে যেতে পারেননি। সাম্প্রদায়িক শক্তি আমাদের মহান নেতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পৃথিবীর সভ্যতার ইতিহাসকে ম্লান করে দিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
তিনি বলেন, জাতির পিতার হত্যাকারীদের মূল লক্ষ্যই ছিল অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ যে বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে সেই বাংলাদেশকে খন্ড-বিখন্ডিত করা। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা। সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল জাতির পিতাকে হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে। এই সাম্প্রদায়িক শক্তি আমাদের এই বাংলাদেশে ১৯৭৫ সাল থেকে শুরু করে নানাভাবে বিদ্বেষ ছড়িয়ে সনাতন ধর্মালম্বীদের ওপর অত্যাচার করছে।
গীতা সংঘ মতিঝিল শাখার সভাপতি নিত্যানন্দ বর্ধনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গোপাল কুমার দাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে ছিলেন গীতা সংঘ বাংলাদেশের সভাপতি নিত্যানন্দ চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. দিলীপ রায়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি দেবাশীষ বিশ্বাস, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মারুফ আহমেদ মনসুর, ১০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নওশেদ আলীসহ স্থানীয় নেতারা।