‘আগুন সন্ত্রাসীদের কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ১১:৫১ পিএম
বিএনপির সকাল-সন্ধ্যা হরতালের প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ। দলটির সহযোগী এবং ভাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোও রোববার ঢাকার রাজপথে অবস্থান নিয়ে অনুরূপ কর্মসূচি পালন করে। এসব মিছিল এবং সমাবেশ থেকে যে কোনো মূল্যে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য রুখে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।
নেতারা বলেন, বিএনপি-জামায়াত অপশক্তিকে আর কোথাও দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। এই অপশক্তিকে দেশ থেকে চিরতরে বিদায় জানাতে পাড়া মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, আগুন সন্ত্রাসীদের কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
বিকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে হানিফ আরও বলেন, বিএনপির সন্ত্রাসী বাহিনী পুলিশ হত্যা করে, পুলিশের ওপর আক্রমণ, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে আক্রমণের পর সমাবেশ পণ্ড হওয়ায় তারা হরতাল দিয়েছে। নিজেরা অপকর্ম করে তার দায় অন্যের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু এবার আর তাদের রক্ষা হবে না। এই অপকর্মের দায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরদের বহন করতে হবে, তাদের আর ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, বিএনপি দেশে এবং বিদেশে সন্ত্রাসী দল হিসেবে চিহ্নিত। আমরা বারবার বলেছি, তাদের চরিত্র কখনোই পালটাবে না। শনিবারের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে তাদের স্বরূপ উন্মোচন হয়েছে। আবারও প্রমাণ হয়েছে তারা উন্নয়ন চায় না, দেশ ধ্বংস করতে চায়।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ঢাকার রাজপথে আমাদের প্রয়াত নেতা সাহারা খাতুন ও মোহাম্মদ নাসিম, আজকের সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, সাবের হোসেন চৌধুরী, আসাদুজ্জামান নূরের মতো সিনিয়র নেতাদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়েছিল। তারপরও আমরা পুলিশের ওপর আক্রমণ করিনি।
তিনি বলেন, অথচ আমরা দেখছি ২০১৩ সালের পর থেকে প্রতিটি আন্দোলনে মূল টার্গেট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ২০১৩ সালে গাইবান্ধায় পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণ করে পিটিয়ে কুপিয়ে পুলিশ হত্যা করা হয়েছিল। আমরা দেখেছিলাম রাজশাহীতে কীভাবে পুলিশকে পিটিয়ে রাজপথে ফেলে রেখেছিল। বিএনপি যখনই আন্দোলনে নামে তখনই দেখা যায়, তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা করে। তারা এ দেশকে ধ্বংস করতে চায়, দেশের প্রশাসন যন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম। বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন প্রমুখ।
এর আগে সকালে রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ থেকে একটি মিছিল জিপিও-শহিদ নূর হোসেন স্কয়ার হয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। এই মিছিলে অংশ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, নগর নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ মহি প্রমুখ।
আওয়ামী লীগের মিছিলের পর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এ ছাড়াও বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে রোববার মিছিল করেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। এই মিছিলের নেতৃত্ব দেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু।
এদিকে বিএনপির ডাকা হরতালের প্রতিবাদে রোববার বেলা ১১টায় মিরপুরের শাহ আলী মাজার থেকে একটি মিছিল বের হয়ে মিরপুর-১ গোলচত্বরে এসে শেষ হয়। এতে নেতৃত্ব দেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি। পরে মিরপুর-১ গোল চত্বরে সমাবেশ করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ।
১৪ দলের বিক্ষোভ সমাবেশ সোমবার : বিএনপি-জামায়াত ‘অপশক্তি কর্তৃক প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও পুলিশ হাসপাতালে হামলা, পুলিশ সদস্য হত্যা, সাংবাদিক নির্যাতন, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতিবাদে’ সোমবার বিক্ষোভ সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। বিকাল ৩টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। রোববার আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।