বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে একহাত নিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আনিসুল হক বলেন, একজন বুদ্ধিমান মিথ্যা বললে তাকে ধরতে দেরি লাগে। আর যদি কেউ বোকার মতো মিথ্যা কথা বলেন, তাহলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে ধরা পড়ে যান। মির্জা ফখরুল ইসলাম হচ্ছেন সেই রকম, যিনি প্রকৃত তথ্য না জেনেই কথা বলেন।
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে ‘সন্ত্রাস-মৌলবাদ-জঙ্গিবাদের অভয়াশ্রম বিএনপি-জামায়াতের নির্দেশে ২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলা’ দিবসে শহিদদের স্মরণে ছাত্রলীগের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, ‘একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ষড়যন্ত্রে তারেক রহমান জড়িত ছিল বলে মুফতি হান্নান তার জবানবন্দিতে বলে গেছেন। অথচ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মিথ্যা কথা বলছেন। তাকে বলব- এসব তথ্য জেনে মন্তব্য করবেন।’
‘বিএনপির মিথ্যাচারের’ বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম ভুলে গেছেন। মুফতি হান্নানকে অন্য কয়েকটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। তখন সেসব মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তখন এক পর্যায়ে মুফতি হান্নান বললেন- দেখুন, আমাকে তো ফাঁসিই দিয়ে দেবেন, আমি কিছু সত্য কথা বলতে চাই। কী সে সত্য কথা? পুলিশের কাছে বলব না, আমি বলব ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে।তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বলে গেছেন। জবানবন্দিতে বলে গেছেন তারেক রহমানের সেই হাওয়া ভবনের কথা। এই একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা এবং হত্যা ষড়যন্ত্র কোথায় হয়েছে এবং সেটার আসল নায়ক কে, এসব বলে গেছেন। মির্জা ফখরুলকে বলব আপনি তথ্য জেনে নিয়ে কথা বলুন।
এ সময় বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, যদি আপনাদের এতই মনে হয় বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের একেবারে গাছে উঠিয়ে সরকার বানিয়ে দেবে, তাহলে আপনাদের চ্যালেঞ্জ দিলাম আপনারা নির্বাচনে আসুন। আপনারা যদি জয়লাভ করেন আমাদের আপত্তি নেই।
মন্ত্রী বলেন, আমি জানি বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের ভোট দেবে না। তারা সবসময় সঠিকভাবে ভোট দিতে শিখেছে। আপনাদের মতো ভোটবিহীন নির্বাচন, হ্যাঁ না ভোট, ১৯৯৬ সালের ১৫ আগস্ট কী করেছেন আমরা ভুলিনি। সেজন্যই আপনাদের আন্দোলনে বাতাস নাই, আন্দোলনে মানুষ সম্পৃক্ত হয় না।
আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময় নিয়মতান্ত্রিক এবং গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও আন্দোলন করেছেন। তিনি বাংলার মানুষকে তাদের অধিকার সম্পর্কে শিখিয়েছেন এবং অধিকার আদায়ে কী করতে হয়, তাও জানিয়েছেন। এজন্য তিনি টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ করেছেন এবং বাংলার সর্বস্তরের মানুষকে সংগঠিত করেছেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছয়দফা দিয়েছিলেন বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য। বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ে তিনি ১৩ বছর জেল খেটেছেন। তারপরও তিনি কখনই সামরিক জান্তার সঙ্গে আপস করেননি। বাংলার মানুষকে সত্যিকারভাবে ভালোবাসতেন বলেই তিনি বঙ্গবন্ধু।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময়ই অনুধাবন করেছেন- জনগণের অধিকার, স্বাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ছাত্র সমাজের ভূমিকা অনন্য। সেজন্যই তিনি আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার আগেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
আলোচনা সভায় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। এতে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।