দণ্ডিত ব্যক্তির রাজনীতি করার সুযোগ কোথায়, খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে কাদের
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৬:৫৭ পিএম
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খালেদা জিয়া কি দণ্ডাদেশ থেকে মুক্তি পেয়েছেন? তিনি যে দণ্ডিত, কনভিক্টটেড, সেটা থেকে তিনি কি মুক্তি পেয়েছেন? যেটুকু পেয়েছেন, সেটা মানবিক কারণে। শেখ হাসিনার উদারতার জন্য এটা হয়েছে। কি জন্য? মানবিক কারণটা কেন? অসুস্থ মানুষকে মানবিক কারণে তার দণ্ড মুক্ত নয়, স্থগিত করা হয়েছে। অসুস্থ না হলে তিনি থাকতেন কোথায়? কারাগারে। ঠিক আছে? তাহলে দণ্ডিত ব্যক্তির রাজনীতি করার সুযোগ কোথায়?
বৃহস্পতিবার বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক যৌথসভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের এ যৌথসভায় সভাপতিত্ব করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, মানবিক কারণ আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখেছেন, তিনি (খালেদা জিয়া) মুক্তি পেয়েছেন। তা না হলে দণ্ডিত ব্যক্তি তো জেলে থাকবে। আর দণ্ডিত ব্যক্তি এটা নিয়ে তাদের (বিএনপি) সন্দেহ থাকলে ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে কেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে? নিশ্চয় তিনি (খালেদা জিয়া) ভ্যালিডেবল না, সেজন্য তাকে (তারেক জিয়াকে) এনে বসিয়েছে।
সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শাসসুন্নাহার চাপা, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খানম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য পরভীন জামান কল্পনা, সাহাবুদ্দিন ফরাজী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভার সূচনা বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এখন নতুন একটা সুর তুলেছে। তারা বলছে- ‘বাংলাদেশ সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য হয়ে গেছে’। মির্জা ফখরুল সাহেব নিজে তো প্রভাব ফেরিতে যাননি। কিন্তু একটা বিবৃতি দিয়ে দিলেন। অভিযোগ দিলেন ঠিকই কিন্তু প্রভাব ফেরিতে যাওয়ার এতটুকু তাগিদ অনুভব করেননি। শহিদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনও করেননি।
বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাসের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, কত মানুষ তারা পুড়িয়েছে। কত বাস ড্রাইভার, হেলপার, সাধারণ যাত্রীকে তারা পুড়িয়েছে। কত অফিস, স্কুল, রেললাইন, বিদ্যুতের লাইন পুড়িয়েছে তার হিসাব কি আছে? তারা সন্ত্রাস করে মানুষ পুড়িয়েছে। সেই দলের মুখে আবার সন্ত্রাসের কথা। এই দেশে সন্ত্রাসের জন্মই দিয়েছে তারা। ক্ষমতায় থাকতেই তারা সন্ত্রাস শুরু করেছিল।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আজকে তাদের মুখেই সন্ত্রাস, অভয়ারণ্য এগুলো আমাদের শুনতে হয়। সারা বাংলাদেশে শেখ হাসিনা যেখানেই গেছেন, তার ওপর হামলা হয়েছে। গৌরনদীতে হামলা, চট্টগ্রামে হামলা, ঈশ্বরদীতে হামলা, গ্রেনেড হামলা তো আছেই। তারপর কলারোয়ায় হামলা, এসব ঘটনা তো বেশি দিন আগের নয়। বাংলাদেশে সন্ত্রাসের রাজনীতি বিএনপিই শুরু করেছিল। সন্ত্রাসের সঙ্গে বিএনপির নাম সম্পৃক্ত রয়ে গেছে। সন্ত্রাসের অপর নাম হচ্ছে বিএনপি। বাংলাদেশে নষ্ট রাজনীতির ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। তারাই নষ্ট রাজনীতির হোতা।
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি চলবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নেত্রী গণসংযোগ ও সংদস্য সংগ্রহের বিষয়ে জোর দিয়েছেন। মেয়াদোত্তীর্ণ সংগঠনের সম্মেলনগুলোর কাজও চলতে থাকবে। সঙ্গে সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন পক্রিয়া অনতিবিলম্বের শেষ করতে হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের থানা-ওয়ার্ড কমিটি গঠনের তাগাদা দিয়ে তিনি আরও বলেন, মানুষের জাগরণের দিক থেকে বর্তমান দুই কমিটি নগরে যথেষ্ট সারা ফেলেছে। কিন্তু এ কথাও সত্য এই জাগরণ এক সময় ম্রিয়মাণ হয়ে যাবে, যদি কমিটি না থাকে। এতে যারা পার্টি করে তারা হতাশ হবে। তারা হতাশ হলে আপনি মিছিলে আনবেন কি করে? তারা হতাশ হলে আপনি কর্মসূচি সফলভাবে কিভাবে বাস্তবায়ন করবেন? এটা কিছু দিন সম্ভব, বেশি দিন নয়। এ সময় রোজার আগেই এই কমিটিগুলো ঘোষণা করার নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।