সৈকতে আটকে ৬৭ তিমির মৃত্যু, ঝুঁকিতে আরও ৯০টি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:৫০ পিএম

অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া রাজ্যের একটি সমুদ্র সৈকতে ১৫৭টি তিমি আটকা পড়েছে। এর মধ্যে ৬৭টি তিমি মারা গেছে। বাকিগুলোও মৃত্যুর ঝুঁকিতে। জীবিত উদ্ধারে জোর চেষ্টা চলছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) তাসমানিয়ার উত্তর-পশ্চিম উপকূলে আর্থার রিভারের নিকটে সমুদ্র সৈকতে এসব তিমি আটকে পড়ে বলে মনে করা হচ্ছে। জায়গাটি তাসমানিয়া রাজ্যের রাজধানী হোবার্ট থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে। আটকে পড়া মাঝারি আকারের কালো তিমিগুলো ‘ফলস কিলার হোয়েল’ নামে পরিচিত।
এ ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশ বিষয়ক দফতর ডিপার্টমেন্ট অব ন্যাচারাল রিসোর্স অ্যান্ড এনভাইরনমেন্ট বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ তিমিগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করছে। সামুদ্রিক প্রাণী বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন।
ব্রেন্ডন ক্লার্ক নামে তাসমানিয়া পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসের কর্মকর্তা বলেছেন, ১৫৭টি ফলস কিলার হোয়েল আটকা পড়েছে। ‘আমাদের অনুমান, তিমিগুলো ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা ধরে সেখানে আটকা পড়ে আছে। এর মধ্যে আর মাত্র ৯০টি বেঁচে আছে।’
তিমিগুলোকে উদ্ধার করে সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব কিনা, বিশেষজ্ঞ ও পশু চিকিৎসকরা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছেন। তবে ব্রেন্ডন ক্লার্ক বলছেন, ‘কাজটা খুবই চ্যালেঞ্জের এবং এক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের জন্যও বেশ ঝুঁকির।’ কর্তৃপক্ষ জনসাধারণকে ঘটনাস্থল এড়িয়ে চলতে বলেছে এবং রাস্তাঘাটে প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোকে তাসমানিয়ায় এমন ঘটনা বেশ কয়েকটি ঘটেছে। যার মধ্যে ২০২০ সালে দেশটির সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনাও রয়েছে। তবে গত ৫০ বছরে একসঙ্গে এতগুলো ফলস কিলার হোয়েল আটকে পড়ার ঘটনা ঘটেনি। ফলস কিলার হোয়েল বৃহত্তম ডলফিন প্রজাতির মধ্যে একটি। এটি ৬ মিটার লম্বা এবং ১.৫ টন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা জোসেলিন ফ্লিন্ট অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনকে জানান, বুধবার সকালে আমার ছেলে রাতে মাছ ধরার সময় তিমিগুলোকে দেখতে পান। সে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে, অনেকগুলো তিমি আটকে পড়েছে। সেখানে বাচ্চা তিমিও আছে... তাদের পরিবার আছে। তাদের চোখ খোলা, তারা তার দিকে তাকিয়ে আছে, যেন সাহায্য চাইছে।’
অস্ট্রেলিয়ান তিমির ৮০ শতাংশেরও বেশি আটকা পড়ার ঘটনা তাসমানিয়ায় ঘটে এবং পশ্চিম উপকূলে ঘটে। ২০২০ সালে ম্যাককোয়ারি বন্দরে আলো দক্ষিণে প্রায় ৪৭০টি পাইলট তিমি আটকা পড়ে এবং উদ্ধার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাদের মধ্যে প্রায় ৩৫০টি মারা যায়। ২০২২ সালে আরও ২০০টি একই বন্দরে আটকা পড়ে।
তিমি অত্যন্ত সামাজিক স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং দলবদ্ধভাবে আটকা পড়ার জন্য সুপরিচিত। সমুদ্র সৈকতে আটকা পড়ার কারণ সম্পর্কে বিভিন্ন তত্ত্ব রয়েছে। কিছু বিশেষজ্ঞ বলেন, উপকূলে ছোট মাছগুলো শিকারের সময় তারা দিশেহারা হয়ে তীরে আটকা পড়তে পারে। অন্যরা মনে করেন, দলের একটি তিমি ভুল করে পুরো দলকে তীরে নিয়ে যেতে পারে।