নিউজউইকে নিবন্ধ
সু চি নয়, রোহিঙ্গা সংকটে ‘সত্যিকার বীর নারী’ শেখ হাসিনা
প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০১৭, ০২:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
খ্যাতনামা মার্কিন সাময়িকী নিউজউইকে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা সংকটে ‘সত্যিকার বীর নারী’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনেক ধনী ও বিশাল দেশের নেতাদের পেছনে ফেলেছেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ধনী দেশ নয়, তবে আমাদের হৃদয়টা বিশাল।’
শনিবার ‘ফরগেট অং সান সু চি, দিস ইজ দ্য রিয়েল হিরোইন অব দ্য রোহিঙ্গা ক্রাইসিস’ শিরোনামে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এসব কথা বলা হয়। এটি লিখেছেন গবেষণা সংস্থা আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইন্সটিটিউটের রেসিডেন্ট ফেলো সদানন্দ দুমে।
নিবন্ধটির অনুবাদ প্রকাশ করা হল :
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে চলতি সপ্তাহে এক নিবন্ধে আমি প্রতিবেশী দুটি দেশের দুই নেত্রীর তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেছিলাম। তারা হলেন মিয়ানমারের অং সান সু চি এবং বাংলাদেশের শেখ হাসিনা।
পশ্চিমা দুনিয়ায় শেখ হাসিনার চেয়ে সু চি বেশি পরিচিত। কিন্তু তাদের মধ্যে বেশ দারুণ সাদৃশ্য রয়েছে। তারা উনিশশ’ চল্লিশের দশকে জন্ম নিয়েছিলেন। সে সময় এশিয়ার অনেক দেশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীন হয়।
তাদের দু’জনেরই বাবা জেনারেল অং সান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজ নিজ দেশের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে খ্যাত। তাদের উভয়কেই হত্যা করেছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ।
আরও একটি কাকতালীয় ঘটনা আছে। শেখ হাসিনা এবং সু চি দু’জনই জীবনের একটা সময় দিল্লিতে কাটিয়েছেন- ষাটের দশকে শিক্ষার্থী হিসেবে সু চি আর ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকে হত্যার পর নির্বাসনে থাকার সময় শেখ হাসিনা।
তাদের দু’জনের মধ্যে স্বল্পভাষী সু চি পশ্চিমা জগতে বেশি পরিচিত। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের জন্য ১৯৯১ সালে নোবেল পুরস্কারজয়ী হওয়ার পর সু চি দৃঢ়তার সঙ্গে বহু বাধা পেরিয়েছেন। তার ইংরেজি বলায় পারদর্শিতা এবং বিশ্বজনীন ভাবমূর্তি এখনও বহাল।
বিপরীতে শেখ হাসিনা একটি খ্যাতনামা পরিবারে জন্ম নিলেও কখনও বাংলাদেশের এলিট বা অভিজাতদের কাতারে নাম লেখাননি। গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে এক সাক্ষাৎকার নেয়ার পর শেখ হাসিনা আমাকে তার বাবার লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ উপহার দেন। আমি বইটিতে তাকে স্বাক্ষর করার অনুরোধ করলে তিনি চমৎকারভাবে বাংলায় তার নাম লেখেন।
পশ্চিমারা হয়তো ‘দ্য লেডি অব ইয়াংগুন’ এর পরিবর্তে ‘দ্য লেডি অব ঢাকা’কে গ্রহণ করতে ইচ্ছুক নয়, তবে রোহিঙ্গা সংকটে সময় এখন শেখ হাসিনার।
শেখ হাসিনা তার দরিদ্র ও জনবহুল দেশটিতে বিপুলসংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে যে বিশাল দরদ দেখিয়েছেন, তা অনেক বড় ও ধনী দেশের নেতারাও দেখাতে পারেননি। শেখ হাসিনা আমাকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ধনী দেশ নয়, তবে আমাদের হৃদয়টা বিশাল।’