মণিপুরে সংঘাত: নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারত সরকার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ এএম
চলতি বছরের শুরুতে মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ওই সময় বিদ্রোহীদের হামলার মুখে মিয়ানমারের কয়েকশো সেনা ভারতে পালিয়ে আসে।
একদিকে মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ, অন্যদিকে মণিপুর রাজ্যে জাতিগত সংঘাত। সবমিলিয়ে এবার আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার পথে হাঁটছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
গত বছর ৩ মে থেকে মণিপুরে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠী দুটির মধ্যে যে সহিংসতা শুরু হয়েছিল, তা গত বেশ কয়েকমাস ধরে একরকম বন্ধ ছিল। কিন্তু সেপ্টেম্বরের গোড়া থেকে আবারও সহিংসতা শুরু হয়। এ কারণে আবারও আলোচনায় উঠে আসে মিয়ানমার পরিস্থিতি।
মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের ১৬০০ কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এরমধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে মণিপুর রাজ্যের সীমান্ত প্রায় ৪০০ কিলোমিটার।মণিপুরে সংঘাতের পেছনে মিয়ানমারের সঙ্গে উন্মুক্ত সীমান্তকেও দায়ী করা হয়।
বুধবার ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ৩১ হাজার কোটি রুপি ব্যয়ে এই ১ হাজার ৬৪৩ কিলোমিটার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিবে ভারত। দিল্লির প্রত্যাশা, এতে অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং মাদক চোরাচালান বন্ধ হবে।
গত মঙ্গলবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, মিয়ানমার সীমান্তের ৩০ কিলোমিটার অঞ্চল ইতোমধ্যেই কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। মণিপুরে অশান্তির অন্যতম কারণ হিসাবেও সীমান্তের এই পরিস্থিতিকেই ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।
পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে ১ হাজার ৬৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত বরাবর কাঁটাতার বসানো ও সড়ক নির্মাণের জন্য অনুমোদন দিয়েছে। মণিপুরে অশান্তির পেছনে মিয়ানমারের সঙ্গে গোটা সীমান্তে কাঁটাতার বসানোর সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
মণিপুর ছাড়াও মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল প্রদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে অরুণাচল প্রদেশের ৫২০ কিলোমিটার, নাগাল্যাণ্ডের ২১৫ কিলোমিটার, মণিপুরের ৩৯৮ কিলোমিটার এবং মিজোরামের ৫১০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে।
তবে ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকারের কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অরুণাচল, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড এবং মণিপুর রাজ্যের মানুষ। তার কারণ, এ অঞ্চলের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ভারত, আর মিয়ানমার- দুই দেশেই তাদের আত্মীয় স্বজনরা বসবাস করেন।
একই জনজাতি-গোষ্ঠীভুক্ত হওয়ার কারণে নিয়মিতই তারা যাতায়াত করতে পারেন। কিন্তু সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিলে এ পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে। তাদের দাবি, রাজনৈতিক সীমান্ত দিয়ে পরিবারের বন্ধন বন্ধ করা যায় না।
এ নিয়ে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালডুহোমা দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আপত্তি জানিয়ে এসেছিলেন।সীমান্ত কাঁটাতার চায় না মিজোরামের প্রভাবশালী সংগঠন ইয়াং মিজো এসোসিয়েশন এবং ইউনাইটেড নাগা কাউন্সিলও।