সুদানে আরএসএফের হামলায় নিহত ২০০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:১১ পিএম

সুদানে আধা-সামরিক বাহিনী (আরএসএফ) তিনদিনে ২০০ জন বেসামরিককে হত্যা করেছে। নিহতদের তালিকায় নারী ও শিশুরাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। দেশটির দক্ষিণে অবস্থিত আল-কাদারিস ও আল-খেলওয়াত গ্রামগুলোতে এ হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। মঙ্গলবার যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী একটি আইনজীবী গ্রুপ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। খবর আল-জাজিরা।
আরএসএফের সদস্যদের বিরুদ্ধে দারফুরে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে’ জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে।
আধা-সামরিক বাহিনীর এমন নির্বিচারে গণহত্যাকে মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আইনজীবী গ্রুপটি। তারা আরও জানিয়েছে, শনিবার থেকে শুরু হওয়া হামলায় আরএসএফ ‘হত্যা, অপহরণ, জোরপূর্বক গুম এবং সম্পত্তি লুটপাট’ চালিয়েছে।
এছাড়াও শত শত আহত বা নিখোঁজে মতো ঘটনাও ঘটেছে। আইনজীবী গ্রুপটির মতে, নীলনদ পার হয়ে পালানোর চেষ্টা করার সময় কিছু বাসিন্দাকে গুলি করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ডুবে গেছে।
অন্যদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানের জনগণ এবং পালিয়ে আসা লক্ষাধিক শরণার্থীর জন্য ৬ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা আবেদন করেছে জাতিসংঘ। সোমবার জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ এবং শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর যৌথভাবে এ উদ্যোগ নিয়েছে।
দেশটির ২৬ মিলিয়ন মানুষের জন্য এই সহায়তা প্যাকেজের আবেদন জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার এক বিবৃতিতে বলেছেন, সুদানের মানবিক অবস্থা ভয়াবহ। দুর্ভিক্ষ চলছে। যৌন সহিংসতা বাড়ছে। শিশু নিহত ও আহত হচ্ছে। দুর্ভোগ ভয়ঙ্কর।
জাতিসংঘের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, দারফুরের বাস্তুচ্যুতি শিবির এবং পশ্চিম নুবা পর্বতমালাসহ সুদানের অন্তত পাঁচটি স্থানে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই রিপোর্ট করা হয়েছে।
ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি এক বিবৃতিতে বলেছেন, সুদানের সমগ্র জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ বাস্তুচ্যুত। এই ভয়ঙ্কর সংঘাতের পরিণতি সুদানের সীমানার বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে।
এছাড়াও জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, অবিলম্বে তহবিল সরবরাহ করা না হলে শরণার্থী শিশুদের দুই-তৃতীয়াংশ প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। ফলে একটি পুরো প্রজন্ম হুমকির সম্মুখীন হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদান সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার সাবেক ডেপুটি আরএসএফ কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান দাগলোর বাহিনীর মধ্যে একটি নৃশংস সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। যুদ্ধটি কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। ১২ মিলিয়নেরও বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আন্তর্জাতিক উদ্ধার কমিটি যুদ্ধটিকে এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে বড় ‘মানবিক সংকট’ বলে অভিহিত করেছে।