Logo
Logo
×

প্রকৃতি ও জীবন

হিমেল হাওয়ায় দোলে দেশি ফুল

Icon

মোকারম হোসেন

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০১৮, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

শীত ঋতুতে আমাদের উদ্ভিদজগৎ নিষ্প্রাণ-বিবর্ণ হয়ে পড়ে। গাছতলায় ঝরাপাতার মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়। প্রকৃতিতে বেড়ে ওঠা উঁচু গাছগুলোয় তেমন পুষ্পসম্ভার দেখা যায় না। তবে সংখ্যায় কম হলেও প্রতিবেশী দেশ থেকে এসে থিতু হওয়া কিছু গাছ এ ঋতুতে বর্ণিল হয়ে ওঠে। যেমন- স্বর্ণঅশোক এবং রাজঅশোক। একটু ভালোভাবে খেয়াল করলেই দেখা যাবে শীতের তীব্রতায় আমাদের হতশ্রী বনগুলোতে বিচিত্র রঙের কলমি ফুল ফোটে। আর চমৎকার রঙের লতানো কিছু ফুল বনের রিক্ততাকে কিছুটা হলেও ঢেকে দেয়। তবে সংখ্যায় তা নগণ্যই বলা চলে। এমনই কয়েকটি দেশি ফুল নিয়ে এ আয়োজন।

তুণ : মাঝারি থেকে বড় আকারের বৃক্ষ, ৩৭ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে, প্রসারিত এবং গোলাকার মুকুট। পত্রখণ্ডক লম্বাটে। ফুল ঘিয়ে-সাদা রঙের, সুগন্ধিযুক্ত। ফল একটি ক্যাপসুলের মতো। মাঘ মাসে ফুল হয় এবং আষাঢ় মাসে ফল পাকে। বীজ থেকে চারা হয়। বাকল জটিল আমাশয়ে উপকারি। প্রচলিত অন্যান্য নাম- পিয়াতুন, পিও, কুমা, প্রিয়াস, চিকাডো, নানডি ব্রিকশা। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ এবং পূর্ব অস্ট্রেলিয়ায় সহজলভ্য। বৈজ্ঞানিক নাম : Toona ciliata.

কাঞ্চন-লতা : চট্টগ্রাম এবং টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর বনে পাওয়া যায়। চেহুর, তাউ বা চেহুল নামেও পরিচিত। বেশ বড়, কাষ্ঠল লতা, ৯ মিটারের বেশি লম্বা হতে পারে, কাণ্ড পুরু। পাতা সরল, আগার দিকে গভীরভাবে দু’ভাগে বিভক্ত। ফুল ছোট, ঘিয়ে-সাদা রঙের। ফল শিমের মতো। অগ্রহায়ণ মাসে ফুল ফোটে। পাতা বেশ বড়। এক সময় পাতায় মুড়িয়ে সওদাপাতি বিক্রি হতো। বীজ থেকে চারা হয়। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়। সংরক্ষণ তথ্য অপর্যাপ্ত (DD). বৈজ্ঞানিক নাম : Bauhinia vahlii.

কুচাই বা কনকলতা : সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ে জন্মে। কাঁটাযুক্ত কাষ্ঠল লতা। ফুল হলুদ-সোনালি রঙের, ছোট টিউবের মতো, নিচের দিকে ঘণ্টার মতো ঝুলে থাকে। মঞ্জুরিদণ্ড শাখাবহুল। ফুল নিচ থেকে ওপরের দিকে পর্যায়ক্রমে ফোটে। ফোটার মৌসুম আশ্বিন থেকে অগ্রহায়ণ মাস। বীজ থেকে বংশবৃদ্ধি হয়। এটি মূলত উষ্ণ ও উপ-উষ্ণ অঞ্চলের গাছ। ভারত, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, ভিয়েতনাম ও চীনে পাওয়া যায়। গাছটির বিপন্নতা যাচাই হয়নি (NE). বৈজ্ঞানিক নাম : Caesalpinia enneaphylla.

বনজাম : বলধা গার্ডেনসহ দেশের সব জায়গাতেই দেখা যায়। গুল্মশ্রেণীর চিরসবুজ গাছ। ৫ থেকে ৬ মিটার উঁচু হতে পারে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঝোপালো আকৃতির। পাতা ডিম্ব-আয়তাকার, সবুজ। ফুল ও ফল : মাঘ-জ্যৈষ্ঠ। ফুলের রং গোলাপি, গভীর ভাঁজযুক্ত পাপড়ি সংখ্যা ৫। ফল ছোট ও রসালো, দেখতে কমলা রঙের, পাকলে কালো হয়। ফলে একটিমাত্র বীজ থাকে। বীজ থেকে চারা হয়। জন্মস্থান ভারত উপমহাদেশ, শ্রীলঙ্কা। সংরক্ষণ নির্ভরশীল (পফ)। বৈজ্ঞানিক নাম : Ardisia solanacea.

লেখক : প্রকৃতিবিষয়ক লেখক, সম্পাদক : তরু-পপ্লব

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম