সিরিয়ায় শত শত মানুষ কাতরাচ্ছে
বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস হামলা : নিহত ৭০
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০১৮, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস হামলায় নিহত ৭০, শিশুরা চরম দুর্ভোগে
সিরিয়ার পূর্ব ঘৌটার দুমা শহরে সম্ভাব্য বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস হামলায় ৭০ জন নিহত হয়েছেন। আহত অবস্থায় কাতরাচ্ছেন আরও শতাধিক।
অভিযোগ উঠেছে, সরকারি বাহিনী এ হামলা চালিয়েছে। তবে সিরিয়া সরকার ও মিত্র রাশিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, রাসায়নিক হামলা চালানো হলে এর দায় রাশিয়াকে নিতে হবে।
রাশিয়া বলেছে, সিরিয়া সেনাদের সাফল্য ম্লান করতে রাসায়নিক হামলার অভিযোগ তোলা হচ্ছে। বিবিসি, সিএনএন।
সিরিয়ার পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী শনিবার জনায়, পূর্ব ঘৌটার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দুমা শহরে রাসায়নিক হামলা চালানো হয়েছে। হোয়াইট হেলমেটস, দুমা কোঅর্ডিনেশন কমিটি ও বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ঘৌটা মিডিয়া সেন্টার বলেছে, হেলিকপ্টার থেকে বিষাক্ত গ্যাস ভর্তি ব্যারেল বোমা ফেলা হয়েছে।
এতে দমবন্ধ হয়ে মারা গেছে দুমার বেশ কয়েকজন। শ্বাসকষ্টে ভুগছে আরও অনেকে। ৭০ জনের নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস।
অবজারভেটরির পরিচালক রামি আবদুল রহমান জানিয়েছেন, হামলায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে কি-না তিনি নিশ্চিত নন। বিদ্রোহী পক্ষ সরকারি বাহিনীকে সিরিন গ্যাস হামলায় দায়ী করলেও আসাদ সরকারের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
তারা হামলায় জয়েশ আল-ইসলাম নামের জঙ্গিগোষ্ঠীকে দায়ী করেছে। তবে ওই সংগঠন রাসায়নিক গ্যাস ব্যবহারের দায় স্বীকার করেনি।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা এক সরকারি সূত্রের বরাত দিয়েছে বলেছে, পলায়নপর সন্ত্রাসীদের ঘাঁটির দিকে সরকারি বাহিনীর অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করতে বাহিনীর বিরুদ্ধে রাসায়নিক হামলার অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
একই সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যমটি আরও বলেছে, ‘সরকারি বাহিনী তথা সিরিয়ান আরব আর্মির রাসায়নিক গ্যাস ব্যবহার করার কোনো প্রয়োজন নেই।’
পূর্ব ঘৌটায় ২০১১ সালে প্রথম সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছে এটাই ছিল বিদ্রোহীদের সর্বশেষ ঘাঁটি। গত এক মাসের লাগাতার হামলার পর সেখান থেকে পালানো শুরু করে বিদ্রোহীরা।
১৮ ফেব্রুয়ারি আক্রমণ শুরু করা আসাদ বাহিনী এলাকাটিতে বিদ্রোহীদের প্রতিরোধ প্রচেষ্টা ভেস্তে দিয়ে পূর্ব ঘৌটার দুই-তৃতীয়াংশ নিজেদের দখলে নেয়। বাকি রয়েছে শুধু জইশ আল ইসলাম নিয়ন্ত্রিত দুমা শহর।
বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য দুমায় কয়েকদিন হামলা বন্ধ রেখেছিল সরকারি বাহিনী। আলোচনার মাধ্যমে জইশ আল ইসলামের যোদ্ধারা দুমা ছাড়তে রাজি না হওয়ায় শুক্রবার বিকাল থেকে শহরটিতে ফের ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করে সরকারি বাহিনীগুলো।
এক বিবৃতিতে সিরিয়া সরকারের এ কর্মকর্তা পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, সন্ত্রাসীরা নিজেরাই এ হামলা চালিয়েছে। সিরিয়ার প্রতিটি কোনা থেকে সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ করা হবে বলে হুশিয়ারি দেন তিনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক বিবৃতিতে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, এ হামলায় হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। সিরিয়া সরকারের প্রতি রাশিয়ার অবিচল সমর্থনের কারণে তাদেরকেই এ হামলার দায় নিতে হবে।