সংবাদ সম্মেলনে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান
শতভাগ সচ্ছতার সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি

যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৭ মে ২০১৮, ০৯:৫৯ পিএম

নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) বোড অব ট্রাস্টিজ (বিওটি) দাবি করেছে, শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করা হয় প্রতিষ্ঠানটিতে। এ লক্ষে প্রতি বছর সরকার অনুমোদিত বেসরকারি ফার্মের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোটা আর্থিক বিষয় নিরীক্ষা করা হয়। সেই নিরীক্ষা রিপোর্ট রাষ্ট্রপতি কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) পাঠানো হয়।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করে বিওটি।
এ সময় বিওটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, টিউশন ফি আদায়, জমি কেনা, সমাবর্তন, ছাত্র বৃত্তি, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, গবেষণা, বৃত্তি প্রদান, বিদেশ সফর, বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে নিয়মনীতি অনুসরণ করা হয়। এ সংক্রান্ত সব কাগজপত্রই রক্ষিত আছে। কেউ ইচ্ছে করলে তা দেখাতেও প্রস্তুত এনএসইউ ট্রাস্টি বোর্ড।
লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ শাহজাহান আরও বলেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থীর চার বছর পড়তে ব্যয় হয় আট লাখ টাকা। গত ১৫ বছরে মূল্যস্ফীতির পরিমাণ ১০০ শতাংশের বেশি। কিন্তু এ সময়ে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ টিউশন ফি বাড়ানো হয়েছে। ফলে টিউশন ফি কমালে সাময়িকভাবে আমরা যে চলতে পারব না তা নয় তবে নতুন কোনো উন্নয়ন হবে না।
পূর্বাচলে জমি কেনার বিষয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আশালয় হাউজিং থেকে ১০ লাখ টাকা কাঠা হিসেবে ২৫০ বিঘা জমি কেনা হয়েছে। যেখানে আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে। বর্তমানে ওই জমির দাম কাঠাপ্রতি ৪০ লাখ থেকে ৭০ লাখ টাকা। এখানে ক্যাম্পাস করার জন্য আমাদের আরও প্রয়োজন এক হাজার কোটি টাকা। এখন আমরা যদি টিউশন ফি কমাই তাহলে আবাসিক ক্যাম্পাস করব কীভাবে? এরপরও যদি বলা হয় কম টাকার জমি বেশি টাকায় কেনা হয়েছে তাহলে তা হবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এম এ হাশেম ৫০০ কোটি টাকায় কেনা ওই জমি প্রয়োজন মনে করলে এখনই এক হাজার কোটি টাকায় কেনার প্রস্তাব দেন।
সমাবর্তনের বিষয়ে মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে বর্তমান চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ দুবার নিজে উপস্থিত থেকে ডিগ্রি প্রদান করেছেন। অন্য সময়ে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী ও ইউজিসি চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।’
এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের একপ্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ব্যস্ত মানুষ। রাষ্ট্রপতি যে দুবার সমাবর্তনে এসেছেন তা হয়তো তার (শিক্ষামন্ত্রী) খেয়াল নেই। তাই শিক্ষামন্ত্রী অসতর্ক হয়ে তিনি টেলিভিশনের প্রতিবেদনে ‘রাষ্ট্রপতি সমাবর্তনে যান না’ শীর্ষক কথাটি বলে থাকতে পারেন।
সার্বিক বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গড়ে ৮.৪ শতাংশ শিক্ষার্থীকে ২৫ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃত্তি দেয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের বিনা বেতনে পড়ানো হয়। আমরা আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও সংস্থার সঙ্গে ৭৯টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি। আমাদের একটি আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ড রয়েছে।’
তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য তারা সবাই দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে, দেশের সুনামের কথা ভেবে এখানে সময় দেন তারা। এশিয়ার সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে জায়গা করে নিতে চাই। সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপরিচালক (জনসংযোগ) বেলাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।