Logo
Logo
×

সুস্থ থাকুন

পেটের অসুখে রোজায় রোগীদের করণীয়

অনেকের ধারণা রোজা রাখার ফলে পেটে গ্যাস বা পেট ব্যথা হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। ধারণাটি কি সঠিক? রমজানে পেটের ব্যাধি রোগীদের পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের পরিপাকতন্ত্র বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান

Icon

সুস্থ থাকুন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০১৮, ০২:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পেটের অসুখে রোজায় রোগীদের করণীয়

* রমজানে রোজা রাখলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হওয়া আশঙ্কা আছে কি?

** গ্যাস্ট্রিক আসলে কোনো রোগ নয়। পাকস্থলীকে গ্যাস্ট্রিক বলা হয়। অল্প কিছু খেলেই পেট ভরা বা ফোলা ভাব, পেট জ্বালা-পোড়া করা সমস্যাকেই সাধারণত আমরা গ্যাস্ট্রিক বলি। মেডিকেল পরিভাষায় একে ডিসপেপসিয়া বলা হয়। রোজা রাখলে এ রোগীরা আসলে ভালো থাকে। তবে ইফতারে পেট ভরে খেলে, গুরুপাক ও চর্বিযুক্ত খাবার খেলে পক্ষান্তরে তরল খাবার কম খেলে ডিসপেপসিয়ার উপসর্গ বাড়তে পারে। অর্থাৎ রোজা বা ফাস্টিং করলে সমস্যা হয় না, সমস্যা হতে পারে সঠিক ও পরিমিত খাদ্যাভ্যাস না হলে।

* যাদের পেটে আলসার বা ক্ষত আছে তারা কি রোজা রাখতে পারবে?

** এ রোগীদের রোজা রাখতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রাখতে পারবে। দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে এ ক্ষত বা আলসারের তীব্রতা বাড়তে পারে। এর জটিলতা হিসেবে পেটে রক্তক্ষরণ বা পেট ফুটো হয়ে যেতে পারে। এখন যেহেতু বাজারে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর (পিপিআই) পাওয়া যাচ্ছে, এ ওষুধ ইফতার থেকে সাহরির মধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শে ১-২ বার খেয়ে এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রেখে পেপটিক আলসারের রোগীরা রোজা রাখতে পারবে। এ রোগীরা ইফতারে তেলে ভাজা, দুধ ও দুধজাত খাদ্য খাওয়া পরিহার করলে ভালো থাকবে। অধিকাংশ ডিসপেসিয়ার রোগীর মাত্র ১০-২০ ভাগ পেপটিক আলসারে ভুগছে। ওষুধ খাওয়ার পর রোগীদের পেট ব্যথা হলে অতি শিগগির চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

* বুক জ্বালা-পোড়ার রোগীরা রোজায় কীভাবে নিরাপদে থাকবেন?

** মুখে টক-ঢেঁকুর ওঠা, বুক জ্বালা-পোড়া করা যাকে মেডিকেল পরিভাষায় জিইআরডি বলে; তারা রোজা রাখলে ভালো থাকবেন। তবে এ রোগীরা চা-কফি, গুরুপাক ও চর্বিযুক্ত খাবার খেলে এ উপসর্গ বাড়তে পারে। পেঁয়াজু, বেগুনি পরিহার করে চলা ভালো। সাহরিতে খাওয়ার পরপরই ঘুমোতে গেলে উপসর্গ বাড়ে।

* রোজা রাখলে পরিপাকতন্ত্রের কোনো সমস্যা হয় কি?

** সাধারণভাবে ধারণা করা হয় দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে পেটে গ্যাস বা বুঁদবুঁদ ভাব যাকে অ্যাবডমিনাল ব্লটিং বলে, টক ঢেঁকুর উঠা যাকে বেলচিং বলে কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া হতে পারে। প্রকৃত পক্ষে এগুলো অভুক্ত থাকার জন্য হয় না, কী খেলেন এবং কতটুকু খেলেন তার ওপর ভিত্তি করে বাড়ে। আমাদের দেশের অনেকের দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খেলে পেটে সমস্যা হয়। এ রোগীরা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সে ভুগছে। তারা এ খাবার না খেলে ভালো থাকবেন। খেতে চাইলে ল্যাকটোজ ট্যাবলেট খেয়ে খেতে পারেন।

* এ সময় কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া হওয়ার কারণ কী?

** ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত তরল না খেলে পক্ষান্তরে গুরুপাক খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। আমাদের ট্রাডিশনাল ইফতার খাওয়ার জন্য দেহে ফিজিওলজিক্যাল পরিবর্তনের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হচ্ছে। এ রোগীরা রাতে শোয়ার আগে এক গ্লাস পানিতে ৫-৭ চামচ ইসবগুলের ভুসি খেয়ে শুতে গেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা লাঘব হবে। সবজি, ফল খেলে ও ব্যায়াম করে এ সমস্যা দূর করা যায়।

পক্ষান্তরে ডায়রিয়া হওয়ার কারণ রাস্তাঘাটের খাবার ও তরল গ্রহণ কিংবা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের জন্য। এর সঙ্গে ফাস্টিংয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। আইবিএস রোগীরা শাকসবজি, ফল, দুধ খেলে কারও কারও ডায়রিয়া কারও কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। এ খাওয়া পরিহার করলেই তারা ভালো থাকবেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম