
প্রিন্ট: ২৯ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৫ এএম

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০১৮, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরবাগডাঙ্গায় পদ্মার ভাঙনে হুমকির মুখে তিনটি বিজিবি ক্যাম্পসহ ইউনিয়নের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ২ বছরেও সম্ভব হয়নি ডিপিপি প্রণয়নের কাজ। শুষ্ক মৌসুমেও ভাঙন অব্যাহত থাকায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন ঘরবাড়ি। দীর্ঘ দুই বছরে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসহযোগিতাকেই দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা। পদ্মার ভাঙনে বিলীনের প্রতীক্ষায় বিজিবি’র চরবাগডাঙ্গা বিওপি। ছয় মাস আগেও চরবাগডাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্প থেকে পদ্মা নদীর দূরত্ব ছিল ৮০০ গজ। ভাঙন অব্যাহত থাকায় বর্তমানে নদীর অবস্থান এসে ঠেকেছে মাত্র আড়াইশ’ গজে। ইতিমধ্যে নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে ৩টি আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার। ডিপিপি থেকে একনেক সভা তারপর বাজেটে অর্থ প্রাপ্তির প্রতীক্ষা। স্থানীয়দের অভিযোগ, জরুরি ভিত্তিতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে রাক্ষুসে পদ্মা গিলে খাবে চরবাগডাঙ্গা। শুধু তাই নয়, হুমকির মুখে পড়বে পার্শ^বর্তী কয়েকটি ইউনিয়নসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহর।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৯ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এসএম আবুল এহসান জানান, গত এক বছর এখানে যেভাবে ভাঙন চলমান রয়েছে। তাতে আমাদের চরবাগডাঙ্গা বিওপিটি অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্রুত বড় ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সামনের বর্ষা মৌসুমে এটি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিষয়টি আমরা আমাদের সদর দফতরকে অবগত করেছি।
সরেজমিন দেখা গেছে, চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের পার্শ্ববর্তী কাইড়াপাড়া গত ৩ মাসের মধ্যে তলিয়ে গেছে নদীগর্ভে। বিজিবি’র চরবাগডাঙ্গা বিওপিটি থেকে মাত্র আড়াইশ’ গজ দূর দিয়ে বইছে প্রমত্তা পদ্মা। বিওপি’র বিজিবি সদস্যরা যুগান্তরকে জানান, ইতিমধ্যে তিনটি আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
এ সময় কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা কাউয়ুম আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, ভাঙতে ভাঙতে নদী এখন ক্যাম্পের কাছে চলে এসেছে। তিন মাস আগেও এখানে আমাদের বাড়ি ছিল, এখন পদ্মা নদীর মধ্যখানে। ইসাহাক আলী নামে আরেক ব্যক্তি জানান, আমার বয়স ৬০ বছর। নদী এখান থেকে অনেক দূরে ছিল। আমরা কখনও ভাবিনি নদী ভাঙতে ভাঙতে এখানে চলে আসবে। সামনেই তো দেখতে পাচ্ছেন এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ি ভেঙে নিচ্ছে। এসব বাড়ির মানুষগুলোর থাকার আর কোনো জায়গা নেই। আলমগীর হোসেন নামে স্থানীয় অধিবাসী জানান, হুমকির মধ্যে আছে বিজিবি’র চরবাগডাঙ্গা বিওপি, ফরিদপুর বিওপি, বাখের আলী কোম্পানি ক্যাম্প, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, ভূমি অফিস, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি উচ্চবিদ্যালয়, দাখিল মাদ্রাসা ও স্থানীয় একাট হাট।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহিদুল আলম ২ বছর থেকে নদী ভাঙনের কথা স্বীকার করে যুগান্তরকে জানান, নদীর ২-১ মিটার মাটি বাকিটা বালি। ফলে বাতাসেই সেগুলো ঝড়ে পড়ে। সাইনবোর্ড বাজার থেকে ইন্দোবাংলা বর্ডার পর্যন্ত দুই দশমিক ছয় কিলোমিটার নদী প্রতিরক্ষার ডিপিপি তৈরি করেছি। দু-একদিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করব।